অনুসরন করুন :
আল-কুরআন

আল কুরআন : আল- আম্বিয়া : ৪৪ থেকে ৬৪

বরং আমরাই তাদের এবং তাদের পূর্ব পুরুষদের ভোগবিলাসের উপকরণ দিয়েছি, তাছাড়া তাদের বয়সকালও হয়েছিল দীর্ঘ। তারা কি দেখেনা, আমরা তাদের দেশকে চারদিক থেকে সংকু...

বিস্তারিত
আল-হাদীস

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন

আবু আইয়ুব রা. বলেন, আমি যখনি তোমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পিছনে নামায পড়েছি, তাকে নামায শেষ করে এই দোয়া পড়তে শুনেছি। (যার অর্থ:) হে...

বিস্তারিত
সম্পাদকীয়

আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা

প্রাণের বাংলাদেশ স্বাধীন হলো। প্রিয় বাংলাদেশ স্বাধীন হলো। এই স্বাধীনতা আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা ৭১ সা...

বিস্তারিত

স্নায়ুযুদ্ধের শিকার মুসলিম বিশ্ব :কারণ ও করণীয়

ড . মোহাম্মাদ ওসমান গানি

স্নায়ুযুদ্ধ কী ও কেন?

স্নায়ুযুদ্ধ হচ্ছে যার আরবী হচ্ছে ; ‘আল গাযউল ফিকরী বা বুদ্ধি ও কৌশলের যুদ্ধ। পরিভাষায় বলা যায়-স্নায়ুযুদ্ধ এমন যুদ্ধ যাতে সৈন্যবাহিনী ও অস্ত্র-শস্ত্রের প্রয়োজন হয় না। কোনো ধরনের রক্তপাত হয় না ।

অর্থাৎ এমন প্লান ও পরিকল্পিত কাজ যা মানবজীবনে ব্যক্তিগত, সামাজিক ও চারিত্রিক জীবনে প্রভাব ফেলে। এ কাজে ইসলামের শত্রুরা বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে ইসলামী রাষ্ট্রগুলোতে মুসলিমদেরকে তাদের দীন থেকে দূরে সরিয়ে রাখে, মুসলিমদের ঐক্য বিনষ্ট করে, তাদের সামাজিক বন্ধন ছিন্ন করে এবং তাদের শক্তিকে দুর্বল করে তাদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করে, চাই সেটি সরাসরি হোক কিংবা গোপনীয়ভাবে হোক; রাজনৈতিকভাবে হোক কিংবা অরাজনৈতিকভাবে হোক; সেটি মিলেটারি দিয়ে হোক কিংবা মিলেটারি ছাড়া হোক। বর্তমান মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় সংকট হচ্ছে পশ্চিমাদের চাপিয়ে দেয়া স্নায়ুযুদ্ধ।

স্নায়ুযুদ্ধ কেন?

১. আল্লাহর মনোনীত দীন ইসলাম। ২. আকীদা হিসেবে ইসলামই শ্রেষ্ঠ। ৩.আদর্শ হিসেবে ইসলামই চির অনুসরণীয়। ৪. যতদিন আল-কুরআন    পৃথিবীর বুকে অবশিষ্ট থাকবে ততদিন মুসলিমদেরকে ধোকা দেয়ার আশা করা ঠিক হবে না। ৫. অস্ত্র দিয়ে সরাসরি ইসলামের মোকাবেলা করার ক্ষমতা কোনো জাতির নেই।      ৬. যুদ্ধের মাধ্যমে মুসলিমদের ওপর বিজয় লাভ করা সম্ভব নয়। ৭. মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে অতীতে ও বর্তমানে ইয়াহুদী জাতি সবচেয়ে বড় চক্রান্ত করেছে। তাদের এই চক্রান্তের কৌশল হিসেবে বেছে নিয়েছে ¯œায়ুযুদ্ধকে। ৮. মিলেটারি ও অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধের চেয়ে স্নায়ুযুদ্ধ হচ্ছে হাজার ও লক্ষগুণ বিপদজনক। ৯. স্বাধীনতা, প্রগতি ও যুগের চাহিদার নামে বর্তমান মুসলিম উম্মাহকে দুর্বল করা হচ্ছে  এ স্নয়ুযুদ্ধের  মূল উদ্দেশ্য। ১০. মুসলিম জাতিসত্তা ও দীনি ফিতরাত নষ্ট করে দেয়া হচ্ছে স্নায়ুযুদ্ধের আঘাতের মূল লক্ষ্য। ১১. মুসলিম প্রজন্মকে অচল করে দেয়া হচ্ছে এ স্নায়ুযুদ্ধের আসল টার্গেট।

স্নায়ুযুদ্ধের উদ্দেশ্য স্নায়ুযুদ্ধের উদ্দেশ্য প্রধাণত দুটি:

প্রথম উদ্দেশ্য: মুসলিমদের ঘরের বাহিরে ইসলামের প্রকৃত রূপ বা অবস্থা প্রসারিত হতে বাধা প্রদান করা। কারণ তারা ভালো করেই জানে যে, ইসলাম একটি আদর্শ দীন। আল্লাহর তা'আলা বলেন “নিশ্চয় ইসলামই আল্ল­াহ নিকট একমাত্র দীন। (সূরা আলে ইমরান: ১৯)

এ দীনই মানবজাতিকে প্রকৃতপক্ষে বিভিন্ন চাপ ও নিষ্পেষণ থেকে মুক্ত করেছে এবং মানবজাতিকে মানুষের দাসত্ব থেকে মুক্ত করে আল্লাহর দাসত্বে পরিণত করেছে।

১. তাই তারা প্রথম উদ্দেশ্য বাস্তবায়েনে ইসলামী শরীয়তের ব্যাপারে বিভিন্ন মিথ্যা ছড়ায়। যেমন-তারা বলে: ইসলাম অন্যান্য ধর্ম থেকে সংগৃহীত, কুরআন আল্ল­াহর পক্ষ থেকে মুহাম্মাদ সাল্ল­াল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্ল­ামের ওপর নাযিল করা হয়নি ইত্যাদি। এর মাধ্যমে তারা ইসলাম অনুসারীদের দৃষ্টি অন্য দিকে ফিরাতে চায় এবং তাদের উদ্দেশ্য এই দীনের প্রভাব যেন তাদের অন্তরের ভিতর প্রবেশ করতে না পারে।

২. ইসলামী সমাজে মুসলিমদের ব্যক্তিগত দুর্বলতা বড় করে তুলে ধরে ইসলামের ওপর নিক্ষেপ করে বলে এটাই হচ্ছে ইসলাম। আমরা দৃঢ়তার সাথে এটা অস্বীকার করি যে, মুসলিমদের ব্যর্থতা ও দুর্বলতার জন্য দায়ী ইসলাম নয়। মুসলিমদের অনুন্নতি ও ব্যর্থতা তাদের ত্রুটি। এটা ইসলামের ত্রুটি নয়।

৩. তারা ইসলামকে এমনভাবে চিত্রায়িত করে যে, ইসলাম কঠোর ও হত্যা-     রাহাজানির ধর্ম। ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়ে়ছে তরবারির মাধ্যমে। ইসলামের অনুসারীরা হচ্ছে জংলী হিংস্র। তাদের কোনো দয়া-মায়া নেই। তারা চোরের হাত কেটে দেয়, যিনাকারীকে পাথর মেরে হত্যা করে ও হত্যাকারীর ওপর কিসাস প্রয়োগ করে। ৪.তারা এমনভাবে ইসলামের  বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধরে যে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো ত্রুটিযুক্ত। যেমন-তালাক, একাধিক স্ত্রী ইত্যাদি ।

৫. তারা ইসলামে অপবাদ দেয়় যে, ইসলাম তার অনুসারীদের মাঝে তাদের মেধা ও আবিষ্কারের শক্তি অকার্যকর করে দেয়়।

দ্বিতীয় উদ্দেশ্য: ইসলামকে তার ভেতর থেকেই আঘাত করা। মুসলিমদের মাঝে আকীদাগত পার্থক্য উস্কে দেয়া। যেমন- খারিজী দলের আত্মপ্রকাশ, কাদিয়ানীদেরকে সাহায্য করা, বাহায়ীয়া দলকে প্রতিষ্ঠিত করা ইত্যাদি।

বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে মুসলিম যুবক-যুবতীদের আকীদা নষ্ট করা, তাদের চরিত্র ধ্বংস করা, তাদের দীনের প্রতি সন্দেহ  সৃষ্টি করা ও তাদের মধ্যে ইসলামের বিরুদ্ধে হিংসা ও অনিহার বীজ বপন করা। আল্লাহ তা'আলা বলেন, “আর ইহুদী ও নাসারারা আপনার প্রতি কখনো সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না আপনি তাদের মিল্ল­াতের অনুসরণ করেন। (সূরা আল-বাকারাহ: ১২০)

আল্লাহ আরও বলেন, “তারা ভীষণ ষড়যন্ত্র করে আর আমিও ভীষণ কৌশল করি। অতএব, কাফিরদেরকে অবকাশ দিন; তাদেরকে অবকাশ দিন কিছুকালের জন্য। (সূরা আত-ত্বারিক: ১৫-১৭) আল্ল­াহ আরও বলেন, “নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে, তারা আল্ল­াহর পথ থেকে লোকদেরকে নিবৃত্ত করার জন্য তাদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে।   (সূরা আল-আনফাল: ৩৬)

স্নায়ুযুদ্ধের মাধ্যম

শত্রুরা বর্তমান মুসলমিদের দুর্বলতার উৎস ভালোভাবেই জেনে গিয়েছে। এজন্য তারা মুসলিমদের পরাজিত করতে সে পথেই অগ্রসর হচ্ছে। আর তাদের দুর্বলতার সে উৎস হলো নফস্ বা কু-প্রবৃত্তি ।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নবম লুইস মিসর আক্রমণের সময় আল-মানসুরায় বন্দী হয়। অতঃপর তাকে চার বছরের কারাদ- দেয়া হয়। বন্দী জীবনের এই দীর্ঘ সময়ে সে মুসলিমদের মানসিক অবস্থা ভালোভাবে অনুধাবন করতে সক্ষম হয়। মুক্তির পর স্বদেশে সে তার জাতিকে বলেছিল, “সমর শক্তিতে কখনোই তোমরা মুসলমিদেরকে পরাস্ত করতে পারবে না। তাদেরকে  পরাজিত করার একমাত্র উপায় নারী ও সুপেয় শরাবের পেয়ালা। মিঃ লুইসের দেয়া এ তথ্যই শত্রুরা আজ কাজে লাগাচ্ছে। শত্রুরা তাদের ইচ্ছার বাস্তবায়ন ঘটাতে এ পথটি বেছে নিয়েছে। প্রবৃত্তির তাড়নার এ ঘৃণিত পথেই তারা মুসলমিদের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। যেমন- ‘আল মাসুনিয়া'র মত সংগঠনগুলো অতি ঘৃণিত পথে তাদের কার্যসিদ্ধি করে থাকে। তারা বিভিন্ন ক্লাব প্রতিষ্ঠা করে সেখানে মুসলিম নেতৃবৃন্দকে দাওয়াত করে। সমাজের বড় বড় ব্যক্তি ও সরকারি উপরস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই এতে উপস্থিত হয়। এ সকল সংগঠনের লক্ষ্য হলো, মুসলিম বিশ্বের বড় বড় ব্যক্তিত্বকে ঘায়েল করা এবং তাদের চরিত্রে কালিমা লেপন করা। দাওয়াত পেয়ে নেতৃবর্গ সম্মেলনে যোগ দেন। সেখানে মদ ও নারী দেয়া হয়। এছাড়াও তাদের কু-প্রবৃত্তি চাঙ্গা করে কোনো রূপসীর সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হতে বাধ্য করা হয় এবং তা ক্যামেরাবন্দি করে মূলত তাদেরকে জিম্মি করে রাখা হয়। তারপর এসব ছবি বা ভিডিওকে পুঁজি করে শত্রুরা তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করার সুযোগ লাভ করে। এ সুযোগে তারা মুসলমিদের গুরুত্বপূর্ণ ও সংরক্ষিত স্থানগুলোতে তাদের লোক নিয়োগের প্রস্তাব করে। যেমন- তারা বলে: ‘আমাদের সুশিক্ষিত অমুক ব্যক্তিকে আপনার অমুক দপ্তরে নিয়োগ দিতে হবে এবং তার পদ হতে হবে সর্বোচ্চ। আমাদের এ প্রস্তাবে আপনি অসম্মত হলে আপনার এ ভিডিও আমরা সারা বিশ্বে প্রচার করে দিব। নেতার পক্ষে তখন ঐ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা সম্ভব হয় না। ফলে বাধ্য  হয়েই তাকে তা মেনে নিতে হয়। অন্যথায় তার ইজ্জত- সম্মান সবই শেষ হয়ে যাবে! অনুরূপভাবে নেতৃবৃন্দের জাতীয় অর্থ আত্মসাৎ, উৎকোচ গ্রহণের প্রমাণ শত্রুদের হাতে থাকে, যার কারণে       নেতৃবৃন্দ তাদের কাছে জিম্মি হয়ে থাকেন। আর তাদের এ দুর্বলতার সুযোগে শত্রুরা তাদের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় সফল হয়।

স্নায়ুযুদ্ধের মাধ্যমসমূহ

১. মুসলিমদের মাঝে বিশ্বাসগত বিভেদকে উস্কে দেয়া ।

২. সঠিক আকীদাকে নষ্ট করা এবং তা সন্দেহ ধাঁধার মধ্যে ফেলে দেয়া। যেমন, * কুরআন হচ্ছে মাখলুক ।

* আল্লাহ তাআলা মূসা ‘আলাইহিস সালামের সাথে কথা বলেননি।

* আল্লাহ তাআলা ইব্রাহিম ‘আলাইহিস সালামকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেননি । ৩. পুরাতন যুগের দলের পরিবর্তে অত্যাধুনিক নতুন নতুন পক্ষপাতিত্বে  তৈরী করা। যেমন-

   জাতীয়তা,

   গণতন্ত্র,

   সমাজতন্ত্র।

৪. দীনের বিরোধী মতবাদ ও চিন্তা-ধারাকে উপস্থাপন করা। যেমন-

    ধর্মনিরপেক্ষ,

    বিবর্তনবাদ,

    বস্তুবাদ।

৫. ইসলাম বিরোধী আন্দোলনকে প্রতিষ্ঠা ও সহযোগিতা করা। যেমন-

   কাদিয়ানী (নবী দাবিদার)

   বাহাইয়া (সুদকে হালাল)

   শীয়া (ব্যভিচারকে হালাল)

৬. ইহুদী গুপ্ত সংঘের কোর্সে প্রবেশ ঘটানো আর তা বিভিন্ন ধোঁকার ব্যানারে। যেমন-

  মাসুনিয়াহ 

  ক্যাসিনো

  নাইটক্লাব বা লায়ন্সক্লাব

৭. স্নায়ুযুদ্ধের প্রচারে স্থাপন করা মিডিয়া। যেমন-

  রেডিও

   টেলিভিশন

   ইন্টারনেট

৮. মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বিভক্তিকরণের উদ্দেশ্যে। যেমন-

   জেনারেল শিক্ষা

   আলিয়া শিক্ষা

   কওমি শিক্ষা

আমাদেরকে মনে রাখতে হবে, ইসলামের শত্রুরা সব ধরনের পন্থার মাধ্যমে ইসলামকে অবরোধ করতে চেষ্টা করে। একটি ব্যর্থ হলে আরেকটি হয়তো কিছুটা কাজে লাগে। সরাসরি করতে না পারলে গোপনে প্রবেশ ঘটায়। বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যানারে যার বাহ্যিক সুন্দর বাণী, ভিতরে নষ্টের ষড়যন্ত্র রয়েছে এবং এর মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহকে প্রতিহত করার  চেষ্টা করে।

মুসলিম নেতৃবৃন্দ যদি মদ ও নারীর হাতছানিতে আত্মভোলা না হতেন, ঘুষ ও উৎকোচ গ্রহণ করে নিজেদের চরিত্রকে কলঙ্কিত না করতেন তাহলে তারা স্বাধীন ও পবিত্র ব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে পারতেন। শত্রুরাও তাদের কার্যসিদ্ধিতে সফল হতে পারতো না এবং তাদের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হতো না।

স্নায়ুযুদ্ধের অস্ত্রসমূহ

শিক্ষার অস্ত্র:

১. শিক্ষা সিলেবাস 

২. বিশেষ স্কুল, কলেজ ও ইউনিভার্সিটি ৩. বিশেষ সংস্থা ও মিশন

ধর্মীয় অস্ত্র:

১.কাদিয়ানী

২. বাহায়ী

৩. শীয়া

৪. নাস্তিক্যতাবাদী

সামাজিক অস্ত্র:

১. নারী আন্দোলন

২. জন্মনিয়ন্ত্রণ

৩. পরিবার পরিকল্পনা

মিডিয়া অস্ত্র:

১. পত্রিকা

২.সিনেমা

৩.রেডিও-টেলিভিশন

৪. ইন্টারনেট, কার্টুন ইত্যাদি

অর্থনৈতিক অস্ত্র:

১. অর্থনৈতিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা

২. অর্থনৈতিক ঋণ ও  সহযোগিতা

এছাড়াও তাদের অন্তরে যা গোপন করেছে তা আরও বিরাট। যেমন- আল্লাহ তা'আলা বলেন, “তাদের মুখে বিদ্বেষ প্রকাশ পায় এবং তাদের হৃদয় যা গোপন রাখে তা আরো গুরুতর। তোমাদের জন্য আয়াতসমূহ বিশদভাবে বিবৃত করেছি। যদি তোমরা অনুধাবন কর। (সূরা আল ইমরান: ১১৮)

আল্লাহ আরও বলেন, “আর তারা ষড়যন্ত্র করে এবং আল্লাহও (তাদের ষড়যন্ত্রের বিপক্ষে) কৌশল করেন; আর আল্লাহ্ সর্বশ্রেষ্ঠ কৌশলী। (সূরা আল-আনফাল: ৩০)

স্নায়ুযুদ্ধের সূচনা

আল্লাহ তা'আলার নির্দেশ যেদিন ইবলিশ অমান্য করেছিল সেদিন থেকে এই স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হয় এবং এর ধারাবাহিকতা আজ পর্যন্ত চলছে। যেমন- আল্লাহ তা'আলা বলেন, “তিনি বললেন, আমি যখন তোমাকে আদেশ দিলাম তখন কি তোমাকে নিবৃত্ত করল যে, তুমি সাজ্দাহ্ করলে না? সে বলল, আমি তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ; আপনি আমাকে আগুন দিয়ে সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে কাদামাটি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। (সূরা আল-আরাফ: ১২) এখানে ইবলিশ বুদ্ধিবৃত্তিক উত্তর দিয়েছিল। শুধু তাই নয় বরং পরবর্তীতে সে তার কুচক্রী ষড়যন্ত্র সর্বদাই অব্যাহত রেখেছে। আদম ও হাওয়াকে বন্ধু সেজে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে আক্রমণ করেছে ।

কুরআনুল কারীমে এসেছে, তারপর তাদের লজ্জাস্থান, যা তাদের কাছে গোপন রাখা হয়েছিল তা তাদের কাছে প্রকাশ করার জন্য শয়তান তাদেরকে কুমন্ত্রণা দিল এবং বলল, যাতে তোমরা উভয়ে  ফিরিশতা হয়ে যাও কিংবা তোমরা স্থায়ীদের অন্তর্ভুক্ত হও, এ জন্যেই তোমাদের রব এ গাছ থেকে তোমাদেরকে নিষেধ করেছেন। আর সে তাদের উভয়ের কাছে শপথ করে বলল, নিশ্চয় আমি তোমাদের শুভাকাক্ষীদের একজন।"(সূরা আল-আরাফ: ২০-২১)

নূহ আলাইহিস সালামের সময় কতিপয় নেককার লোকের মৃত্যুর পর ইবলিশ সেই সমাজের মানুষের মধ্যে বুদ্ধি করেছিল।   বৃত্তিকভাবে শিরকের সূচনা।

ইব্রাহিম ‘আলাইহিস সালাম মানুষদেরকে আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি বুদ্ধিবৃত্তিক পন্থায় দাওয়াত দিয়েছিলেন। আল্লাহর ইচ্ছায় মারইয়ামের গর্ভে যখন ঈসা 'আলাইহিস সালাম আগমন করেছিলেন তখন মানুষেরা এটাকে সন্দেহের চোখে দেখতে লাগল এবং বুদ্ধিবৃত্তিক আক্রমণ শুরু করেছিল। সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন উত্থাপন করেছিল।

রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের সময়

মক্কার কাফেররা নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া  সাল্লামকে  আদর্শিক দিক থেকে না পারলেও পেশিশক্তি দ্বারা,  তারপর বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে আক্রমণ চালিয়েছিল। সে সময়ের কাফেররা বলতো

১. একজন সাধারণ মানুষ আবার রাসূল হয় কি করে? এ প্রসঙ্গে আল্লাহ জানিয়েছেন, “আরও তারা বলে, 'এ কেমন রাসূল' যে খাওয়া-দাওয়া করে এবং হাটে-বাজারে চলাফেরা করে। (সূরা আল-ফুরকান: ৭)

২. ভীতিপ্রদর্শন করেছে নানাভাবে। পরে আবু তালিবের মাধ্যমে নানা প্রলোভন দেখিয়েছেন ।

৩. ঠাট্টা, হাসি-তামাশা, বিদ্রƒপ ও কথা দিয়ে মানসিকভাবে আক্রমণ করেছে। বর্তমানে মৌলবাদী, সন্ত্রাসী,  প্রগতিবিরোধী ইত্যাদি শব্দ প্রয়োাগ করা হচ্ছে ইসলাম অনুসারীদেরকে।

৪. কুরআন থেকে বিরত রাখার অপচেষ্টা করেছিল। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, আর কাফেররা বলে, “তোমরা এ কুরআনের নির্দেশ শোনো না এবং তা আবৃত্তির সময় শোরগোল সৃষ্টি কর, যাতে তোমরা জয়ী হতে পার। (সূরা হা-মীম সাজদা, আয়াত: ২৬)

বাংলাদেশে যখন শিক্ষিতের হার ছিল ৫% তখন নিয়মিত কুরআনের পাঠক ছিল ৬০% থেকে ৬৫%। আর এখন শিক্ষিতের হার ৬০% থেকে ৬৫% হওয়ার পরেও কুরআনের পাঠক মাত্র ৫% থেকে ৬%। বর্তমানে কুরআনকে সরাসরি তালিম না দিয়ে ‘কিতাবের তালিম' নামে এক জঘন্য প্রথা চালু করা হয়ে়ছে।

৫. হাবশায় (ইথিওপিয়া) হিজরতকারী মুসলিমদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা। সেখানে হিজরতকারী পুরুষ ছিল ৮৩ জন ও মহিলা ছিল ১৯ জন। মোট ১০২ জনকে ফিরিয়ে আনার জন্য কাফেররা প্রচুর উপঢৌকন দিয়ে আব্দুল্ল­াহ বিন   আবি রাবিয়াহ ও আমর বিন আল- আসকে পাঠায়।

৬. প্রলোভন দেখানো হয়েছিল আপোষমূলক সমাধানের লক্ষ্যে। কাফেরদের উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন প্রতিনিধিদল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসে। এদের মধ্যে উল্লে­খযোগ্য হলো- উতবাহ, শাইবা, আবু সুফিয়ান, নদর বিন হারিস, উমাইয়া, খালিদ ও আবু জাহেল প্রমুখ। এরা রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অর্থ-সম্পদ, ক্ষমতা, আরবের সবচেয়ে সুন্দরী নারী দিতে চেয়েছিল।

হিজরতের পরে মদিনায়

৭. আবদুল্লাহ বিন উবাই ঐুঢ়ড়পৎরংু এর মাধ্যমে ইসলাম গ্রহণ করেছিল। প্রকাশ্যে সে ইসলামের বাধা হয়়নি।

৮. আউস ও খাজরাজ গোত্রীয় দ্বন্দ্ব উস্কে দেয় ইয়াহুদী বৃদ্ধ শাস বিন ক্বায়েস।

৯. যুদ্ধের প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ার পর যুদ্ধের ময়দানে পৌঁছার আগে বসরা থেকে ফিরে এসেছিল ৩০০ জন।

১০. আনসার-মুহাজির দ্বন্দ্ব (বনু মুস্তালিক যুদ্ধের পর)।

১১. আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহার বিরুদ্ধে অপবাদ দেয়া হয়েছিল।

অতি সংক্ষেপে মাত্র কয়েককজন নবী রাসূলের কয়েকটি ঘটনার মাধ্যমে “নবী- রাসূলদের সময়ে ওহঃবষষবপঃঁধষ ডধৎ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। ওহঃবষষবপঃঁধষ ডধৎ চলবে হক্ব ও বাতিলের সঙ্গে।(ক্রমাশ:)  

0 | দেখেছেন : 13 |

সম্পর্কিত খবর

অন্তর্বতীকালীন সরকার : উপদেষ্টাদের পরিচয়

ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টা তিনি ২৮ জুন, ১৯৪০ সালে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শুরুতে তিনি তার গ্রামের মহাজন ফকিরের স্কুল নামে একটি বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন শুরু করেন। পরবর্তীতে ১৯৪৪ সালে লামাবাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। পরে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময় তিনি বয়েজ স্কাউটসে যোগদান করেন এবং মাত্র ১৫ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ এশিয়া এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন। ১৯৫৭ সালে মুহাম্মদ ইউনূস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের সম্মান শ্রেণীতে ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই বিএ এবং এমএ সম্পন্ন করেন। স্নাতকের পর কর্মজীবনের শুরুতেই মুহাম্মদ ইউনূস ব্যুরো অব ইকোনমিক্স - এ গবেষণা সহকারী হিসাবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ১৯৬২ সালে চট্টগ্রাম কলেজের অর্থনীতির প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি ফুলব্রাইট স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং পূর্ণ বৃত্তি নিয়ে ভেন্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৯৬৯ সালে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বাংলাদেশ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পরিচিতি বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন হচ্ছে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ । ২০২৪ সালে বাংলাদেশে কোটা আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে এটি গঠিত হয় এবং এটি কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তীতে অসহযোগ আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ২০২৪ সালের ১ জুলাই সংগঠনটি সৃষ্টি হয় এবং সৃষ্টির পরপরই আন্দোলন সফল করার জন্য ৮ জুলাই সংগঠনটি ৬৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি ঘোষণা করে, যার মধ্যে ২৩ জন সমন্বয়ক ও ৪২ জন সহ-সমন্বয়ক ছিলেন। আন্দোলনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার পর ৩ আগস্টে সংগঠনটি দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ১৫৮ সদস্যের সমন্বয়ক দল গঠন করে, যার মধ্যে ৪৯ জন সমন্বয়ক ও ১০৯ জন সহ-সমন্বয়ক ছিলেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে একাধিক সমন্বয়ককে এই সংগঠনের নেতৃত্বে দেখা গেছে। যাদের মধ্যে অন্যতম হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাত রশিদ, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সারজিস আলম,

বাংলা নববর্ষের শুরুর কথা

ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় মানুষ কিছু আনন্দ এবং স্মৃতিকে আপন করে নেয়। আর এ আপন করে নেয়ার বিভিন্ন স্তর এবং সময়ের পথ ধরে সংস্কৃতির বিকাশ। প্রতিটি জাতি ও সভ্যতা সংস্কৃতির মাধ্যমে খুঁজে পায় তার নিজস্ব অনুভূতি এবং স্বকীয় বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশী ও বাঙালী জাতি হিসেবে, ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় আমাদের এমন একটি উৎসব হল পহেলা বৈশাখ। স্বাগতম, সুস্বাগতম বাংলা নববর্ষ। আমরা সবাই প্রতি বছর ১৪ই এপ্রিল ১ বৈশাখের এই দিনটি পালন করে থাকি। কিন্তু আমরা সবাই কি জানি বা কেউ জানার চেষ্টাও করেছি-কি এই পহেলা বৈশাখের ইতিহাস।

সাসপেনশন চা-কফি-লাঞ্চ: নতুন কনসেপ্ট! নতুন কিছু: এমন করা কি সম্ভব!

ইউরোপের একটি দেশ যেখানে এই দৃশ্য অহরহ দেখতে পাবেন -একটি রেস্তোরা। ঐ রেস্তোরার ক্যাশ কাউন্টারে এক ভদ্র মহিলা এলেন আর বললেন ৫ টা কফি আর একটা সাসপেনশন। তারপর উনি পাঁচটি কফির বিল মেটালেন আর চার কাপ কফি নিয়ে চলে গেলেন।