অনুসরন করুন :
আল-কুরআন

আল— হজ্ব : ৩০ থেকে ৩৯

আল কুরআন (আল— হজ্ব : ৩০ থেকে ৩৯) ৩০. এগুলো (হজ্বের বিধান)। এ ছাড়া যে, আল্লাহ এবং পবিত্র (স্থান ও অনুষ্ঠান) সমূহের প্রতি সম্মান দেখাবে, তার প্রভ...

বিস্তারিত
আল-হাদীস

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন

সাঈদ ইবনু আবদুর রহমান মাখযূমী রা. আব্বাদ ইবনু তামীম তৎপিতৃব্য আবদুল্লাহ্ ইবনু যায়দ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয...

বিস্তারিত
সম্পাদকীয়

বাংলাদেশের ইতিহাসে আরেকটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হলো

নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস এর নেতৃত্বে বাংলাদেশের ইতিহাসে আরেকটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হলো। নিঃসন্দেহে এই সরকার একটি বিপ্লবোত্তর সরক...

বিস্তারিত

পরিশুদ্ধ নিয়ত

হযরত মাওলানা সাইয়িদ আশহাদ রশিদি দা.বা. 

নিয়ত পরিশুদ্ধ রাখা কেন অনিবার্য ভাবে প্রয়োজন?

সাইয়িদুনা উমর রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘সমস্ত কাজ নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। ব্যক্তি তাই পাবে, যা সে নিয়ত করবে। অতএব, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সন্তুষ্টির) জন্য হিজরত করেছে, তার হিজরত (বাস্তবিকই) আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের জন্য হয়েছে। আর যে ব্যক্তির হিজরতের (উদ্দেশ্য) ছিল, দুনিয়া

উপার্জন বা কোনো নারীকে বিয়ে করা তার হিজরত সে উদ্দেশ্যেই গণ্য হবে। (সে আখিরাতে কোনো সাওয়াব পাবে না।) (সূরা মুমিনুন: ১১৫)

আল্লাহ কেন মানুষ সৃষ্টি করেছেন?

আমরা দেখতে পাই, পৃথিবীর কোনো মেধাবী ও বুদ্ধিমান মানুষ কোনো কাজ বিনা উদ্দেশ্যে বা লক্ষ্যহীন করে না। তাহলে যেই মহান আল্লাহ সমস্ত প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতার অধিকারী, তিনি কী করে আমাদেরকে কোনো উদ্দেশ্য ছাড়াই সৃষ্টি করতে পারেন! এটা কস্মিনকালেও হতে পারে না। সেমতে দেখুন, আল্লাহ নিজেই বলছেন ‘তোমরা কি মনে করছো যে, আমি তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার কাছে ফিরে আসবে

না। যদি বিনা উদ্দেশ্যে মানুষ সৃষ্ট না হয়ে থাকে তাহলে তার সৃষ্টির পেছনের উদ্দেশ্য কী? কৃষি ক্ষেত্রে নিজ প্রতিভার বিকাশের জন্য কি মানুষ সৃষ্ট হয়েছে? বাণিজ্যের ময়দানে বিপ্লব ঘটানোর জন্য আল্লাহ মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন? শিল্পকারখানায় আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের জোয়ার ভাসানোই কি মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য?  যুদ্ধ-সংঘাতের মাধ্যমে অরাজকতা ও  বিশৃঙ্খলা তৈরী করে পৃথিবীর শান্তি-নিরাপত্তা কেড়ে নেবার জন্যই কি আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছেন? জি, আপনি যদি সদুত্তর পেতে চান তাহলে মহান আল্লাহর পবিত্র গ্রন্থ থেকে তার উত্তর জেনে নিন। আল্লাহ তাআলা বলেছেন ‘আমি জিন ও মানব জাতিকে একমাত্র আমার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি। (সূরা জারিয়াত: ৫৬)

এ আয়াতের মাঝে সুস্পষ্ট ভাষায় মানবসৃষ্টির কারণ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

কেউ হয়তো এ আয়াতের বাহ্যিক বক্তব্য থেকে এই ভুল শিক্ষা নিতে পারে যে, আল্লাহর ইবাদত ছাড়া পৃথিবীতে মানুষের

হয়তো আর কোনো কাজ নেই। পৃথিবীতে এসে সে যদি অন্য কোনো ব্যস্ততায় সময় ব্যয় করে তাহলে সে যেন তার সৃষ্টির উদ্দেশ্য ভুলে গেল! একটি প্রশ্ন ও তার উত্তর এটা কী করে সম্ভব যে, মানুষ পৃথিবীর কাজ-কারবার থেকে মুখ ফিরিয়ে

নেবে! বাণিজ্য, কৃষিকাজ, শিল্প-কল-কারখানা শতভাগ বর্জন করবে! দুনিয়াদারি ত্যাগ করে কোনো একজন নির্জন নিভৃত স্থানে গিয়ে সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করবে! এটা কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। পেটের ভেতরে ক্ষুধার যেই আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে, তা নিবারণ করতে হলে তাকে তো কিছু না কিছু করতে হবে। বিশেষত বর্তমান প্রজন্মের মন-মস্তিস্কে এ প্রশ্ন অবশ্যই দোলা দেবে। ইসলামি শরিয়তে তার উত্তর কিছুটা এভাবে দেওয়া হয়েছে যে, দুনিয়ার কর্মযজ্ঞ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়া কখনই শরিয়তের দাবি নয়। কেননা খোদ আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,পার্থিব ব্যস্ততা,গৃহস্থালী কর্মকা-, দেশশাসন, সামাজিকতা ইত্যাদি ছেড়ে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার সুযোগ ইসলামে নেই। বরং উপর্যুক্ত আয়াতের প্রকৃত ব্যাখ্যা হলো, মানুষ যেন পার্থিব কর্মকা-ে ব্যস্ত হয়েও আল্লাহকে না ভোলে। তার জন্য বাণিজ্যের ময়দানে উন্নতি-অগ্রগতির সুযোগ রয়েছে। মানুষ বিজ্ঞানের ঘোড়া ছুটিয়ে চাঁদে রকেট পাঠাক। আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের জোয়ার বইয়ে দিক। শিল্প ও কারিগরির ক্ষেত্রে সে অন্যদের ছাড়িয়ে যাক; কিন্তু তাকে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে, সময়ের প্রতিটি মোড়ে অবশ্যই মহান আল্লাহর সঙ্গে নিজ বাঁধন যুক্ত রাখতে হবে। সে বাণিজ্য করবে শরিয়তের বিধান অনুসারে। কৃষিকাজ করবে শরিয়ত মাফিক। চুক্তি-মৈত্রী করবে শরিয়ত মেনে। মোটকথা, পৃথিবীর সকল বৈধ কাজ সে করবে। নিজের শ্রমের শতভাগ সে ব্যয় করে অর্পিত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করবে; কিন্তু কখনই আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফিল হবে না।

একটি অভিনব উদাহরণ

পৃথিবীর সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক কী হবে, সে বিষয়টি জনৈক বুযুর্গ একটি উদাহরণ দিয়ে চমৎকার বুঝিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যেভাবে কোনো নৌযান পানি ছাড়া চলে না, তদ্রƒপ মানুষও পৃথিবীর বিভিন্ন কর্মকা-ে ব্যস্ত না হয়ে বাঁচতে পারবে না। কিন্তু একটি নৌকা তখনই পানির ওপর চলবে, যখন পানি নিচে ও নৌকা তার উপরে থাকবে। পানি যদি কখনো নৌকার ওপরে উঠে যায়, তাহলে তা অবশ্যই ডুবে যাবে। অবিকল মানুষও নানা পার্থিব কর্মকা-ে যুক্ত হবে। কিন্তু তার অন্তর দুনিয়াতে না মজে আল্লাহর ভালোবাসাও মারিফাতের মাঝে ডুবে থাকবে। আল্লাহ না করুন, কখনো যদি তার অন্তর দুনিয়ায় ডুবে গিয়ে আল্লাহকে ভুলে যায় তাহলে তার জীবনের নৌকারও সলিল সমাধি ঘটবে। হাশরের ময়দানে আল্লাহ এমন লোকদের সম্বোধন করে বলবেন, ‘এভাবে তোমার কাছে আমার আয়াতগুলো ঁেপৗছেছিল। তুমি সেগুলো ভুলে গিয়েছিলে। তদ্রƒপ আজ তোমাকেও ভুলে যাওয়া হবে।(সূরা ত্বাহা: ১২৬) মোটকথা, মৃত্যুর পর সে তার কৃতকর্মের উপযুক্ত শাস্তি ভোগ করবে।

জীবন-মৃত্যুর টানাপোড়েনের নেপথ্যে কী?

আল্লাহ তাআলা কেন জীবন-মৃত্যুর এই নির্দিষ্ট বলয় দিলেন? কেন তিনি মানবজাতির জন্য পরকালীন জীবন অপেক্ষমাণ রেখেছেন? তার কারণ ও  উদ্দেশ্য বর্ণনা করে তিনি নিজেই কুরআন কারিমে বলেছেন, ‘আল্লাহ মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন যাতে তিনি তোমাদের পরীক্ষা করতে পারেন যে, কে তোমাদের মধ্যে উত্তম আমলকারী।(সূরা মুলক: ০২) এ আয়াতের আলোকে বলা যেতে পারে যে, আল্লাহ তাআলা মানুষের প্রতিটি কাজের যথাযথ মূল্যায়ন করে থাকেন। পরকালে একজন ব্যক্তির সফলতা-ব্যর্থতা নির্ভর করে তার নিজের কর্মকা-ের ওপর। যদি সে ভারী আমল নিয়ে যেতে পারে তাহলে সফলতা তার পদচুম্বন করবে। নয়তো সেখানে তার কপালে অনুতাপ-অনুশোচনাই জুটবে আল্লাহ তাআলা অন্যত্র ইরশাদ করেন, ‘অতঃপর যার পাল্লা ভারী হবে, সে থাকবে সন্তোষজনক জীবনে; আর যার পাল্লা হালকা হবে তার আবাস হবে হাবিয়া।

আপনার আমলনামা কীভাবে সমৃদ্ধ করবেন?

আমলের ভারি ও হালকা হওয়া এবং আল্লাহর কাছে তার গ্রহণযোগ্য বা প্রত্যাখ্যাত হওয়াটা নির্ভর করে ইখলাসের ওপর। যে ব্যক্তি দীনি কাজ করার সময় ¯্রফে আল্লাহর সন্তুষ্টির অভিলাষী হবে, সেই দু-জাহানে সফল হবে। এর বিপরীতে যে ব্যক্তি মানুষকে দেখানোর জন্য দীনি কাজ করবে, নাম কামানো বা পেটপূজার উদ্দেশ্যে নেক কাজ করবে, তার ভাগ্যে আল্লাহর অসস্তুষ্টি ব্যতিরেকে আর কিছুই জুটবে না।

লৌকিকতা ও আত্মপ্রদর্শনীকেন মন্দ?

আল্লাহ তাআলার কাছে পরিমাণ বা আধিক্য কখনই মুখ্য নয়। তাঁর দৃষ্টিতে বান্দার ইখলাসই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যদি কারো আমলের মাঝে তিল পরিমাণ লৌকিকতা বা প্রদর্শনীর মনোবৃত্তি থাকে তাহলে সেই আমল তিনি ছুড়ে ফেলে দেবেন। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, যে ব্যক্তি অন্যকে দেখানোর জন্য আমল করে, সে কেমন যেন নিজ রবের সাথে অন্য কাউকে শিরক বা যুক্ত করলো। আর আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় শিরক অনেক বড় জুলুম।(সূরা লুকমান: ১৩)

কেননা সে নিজেই নিজেকে আল্লাহর রহমত থেকে দূরে তাড়িয়ে দিচ্ছে। সেমতে একটি হাদীসে এসেছে, ‘আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, সমস্ত অংশীদারদের মধ্য হতে আমিই সবচেয়ে বেশী অমুখাপেক্ষী ও পরনির্ভরতামুক্ত। সেমতে যখন কোনো ব্যক্তি কোনো কাজ করার সময় আমার সঙ্গে অন্য কাউকে শরিক করে (অর্থাৎ কাউকে দেখানোর জন্য কোনো কাজ করে) তখন আমি যেমন তাকেও আমার থেকে দূরে সরিয়ে দিই, তেমনই যে ইবাদতে সে আমার সঙ্গে কাউকে শিরক করে, সে কাজও দূরে সরিয়ে দিই।(সহিহ মুসলিম: ২৯৮৫) অন্য বর্ণনায় এ বাক্য এসেছে যে, ‘ইবাদতের মাঝে যে অংশটি আমার জন্য ছিল, সেটাও আমি আমার অংশীদারদের জন্য ছেড়ে দিই। অর্থাৎ পুরো আমলটি তখন গাইরুল্লাহর জন্য হয়ে যায়। এজন্যই তো তাকে শিরক বলা হয়।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কারণে নিজ উম্মতকে শিরকি ইবাদত থেকে বাঁচানোর পথনির্দেশ করে বলেছেন, ‘আমলের (সাওয়াব ও প্রতিদান) নির্ভর করে নিয়তের ওপর। যদি নিয়তের মাঝে ইখলাস ও একনিষ্ঠতা থাকে তাহলে সাওয়াব ও প্রতিদান পাওয়া যাবে। যদি না থাকে তাহলে দুনিয়া ও আখিরাতে চরম সর্বনাশ ছাড়া কিছুই পাওয়া যাবে না।

একবার জনৈক পুরুষ সাহাবি ‘উম্মে কাইস নামের এক মহিলাকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়। তখন তিনি শর্ত ছুড়ে দেন যে, ‘তুমি যদি মদিনা মুনাওয়ারায় আসো তাহলে আমি তোমার কাছে বিয়ে বসতে রাজি আছি। (প্রসঙ্গত মনে রাখা দরকার যে, মক্কা বিজয়ের পূর্বে মুসলমানদের ওপর হিজরত করাটা ফরয বিধান ছিল। সাহাবা কিরাম প্রথমত মক্কা থেকে হাবাশা অভিমুখে হিজরত করেন। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মদিনায় হিজরত করেন তার পর থেকে মদিনায় হিজরত করা সবার ওপর ফরয হয়ে যায়।) ওই পুরুষ সাহাবি উম্মে কাইসের শর্তে রাজি হয়ে মক্কা মুকাররমা থেকে মদিনা মুনাওয়ারায় হিজরত করেন। এ ঘটনা জানতে পেরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘সমস্ত আমলের সাওয়াব নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। ব্যক্তি তাই পাবে, যা সে নিয়ত করবে। অতএব, যে ব্যক্তি দুনিয়া কামানো বা কোনো নারীকে বিয়ে করার জন্য হিজরত করেছে, তার হিজরত সে উদ্দেশ্যেই গণ্য হবে। আল্লাহর জন্য গণ্য হবে না। আখিরাতে কোনো সাওয়াব পাবে না। আল্লাহ তাআলা সমস্ত মুসলমানকে ইখলাস ও একনিষ্ঠতার তাওফিক দিন। নাম-যশ, পার্থিব লালসা, লৌকিকতা, আত্মমুগ্ধতা ও অসৎ নিয়তের কবল থেকে নিরাপদ রাখুন। আমিন। ওয়া সাল্লাল্লাহু আলান-নাবিয়্যিল কারিম।(ক্রমাশ:)

0 | দেখেছেন : 78 |

সম্পর্কিত খবর

ইসলাম ও মাযহাব নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি ও তা নিরসন

লা মাযহাবির পক্ষ থেকে আর একটা প্রশ্ন করা হয়, ইমামগণ সাধারণ মানুষ; তারা তো নবী না। আর সবাই একমত যে নবী ছাড়া প্রতিটি মানুষ যত বড়ই ইমাম হোক সবাই সঠিক করতে পারে আবার ভুল করতে পারে। তাই আমি এমন একজন মানুষকে কিভাবে মানবো যে সঠিক করতে পারে আবার ভুল করতে পারে। ইমামকে মানা ওয়াজিব করে দেওয়া মানে একটা ভুল কাজ

সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাব কুরআন মাজীদ

যাবতীয় কল্যাণ, সর্বপ্রকার জ্ঞান-গরিমা, প্রজ্ঞা ও রহস্যের আধার হল আল কুরআন। একে অনুসরণ করেই দুনিয়া ও আখিরাতে পাওয়া যায় সুখের সন্ধান, মেলে সঠিক পথের দিশা। আল কুরআন মহান আল্লাহর বাণীর অপূর্ব সমাহার বিস্ময়কর এক গ্রন্থের নাম। আল কুরআন আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ সংরক্ষিত এক সংবিধান। আল্লাহ তা‘আলা জিবরাঈল আলাইহিস সালামের মাধ্যমে সুদীর্ঘ ২৩ বছরে মানব জাতির হিদায়াত হিসেবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর যে কিতাব অবতীর্ণ করেছেন তার নাম আল কুরআন। এই কুরআন যেমন সমগ্র মানব জাতির মানসিক সংশয়, সন্দেহ, অস্পষ্টতা, কুপ্রবৃত্তি, লোভ-লালসা নামক নানা রকম রোগ-ব্যাধি নিরাময়ের অব্যর্থ মহৌষধ ঠিক তেমনি দৈহিক রোগ-ব্যাধি, বেদনা, কষ্ট-ক্লেশ এবং জীবন চলার পথের সকল অন্ধকার বিদূরিত করার এক অনবদ্য নির্দেশিকা। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, ‘আমি কুরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা রোগের প্রতিষেধক এবং মুমিনদের জন্য রহমত।’ (বনী ইসরাঈল : ৮২) এই কুরআন হল, সত্য-মিথ্যা এবং বৈধ-অবৈধের সীমা-রেখা

অহংকার ও আত্মতৃপ্তি

যাবতীয় প্রশংসা কেবলই আল্লাহ তা‘আলার যিনি সমগ্র জগতের মালিক ও রব। আর সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল­ামের ওপর, যিনি সমস্ত নবীগণের সরদার ও সর্বোচ্চ সম্মানের অধিকারী। আরও বর্ষিত হোক তার পরিবার-পরিজন ও সমগ্র সাথী-সঙ্গীদের ওপর। মনে রাখতে হবে, অহংকার ও বড়াই মানবাত্মার জন্য খুবই ক্ষতিকর ও মারাত্মক ব্যাধি, যা একজন মানুষের নৈতিক চরিত্রকে শুধু কলুষিতই করে না বরং তা একজন মানুষকে হেদায়াত ও সত্যের পথ থেকে দূরে সরিয়ে ভ্রষ্টতা ও গোমরাহির পথের দিকে নিয়ে যায়। যখন কোনো মানুষের অন্তরে অহংকার ও বড়াইর অনুপ্রবেশ ঘটে, তখন তা তার জ্ঞান, বুদ্ধি ও ইরাদার ওপর প্রাধান্য বিস্তার করে এবং তাকে নানাবিধ প্রলোভন ও প্ররোচনার মাধ্যমে খুব শক্ত হস্তে টেনে নিয়ে যায় ও বাধ্য করে সত্যকে অস্বীকার ও বাস্তবতাকে প্রত্যাখ্যান করতে। আর একজন অহংকারী সবসময় চেষ্টা করে হকের

মুসলিম উম্মাহর বিপর্যয়ের কারণ

বর্তমান মুসলিম উম্মাহর এরূপ পরিণতির সম্মূখীন হওয়ার মৌলিক পাঁচটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। (১) আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে আরোপিত বিধান পারস্পরিক ঐক্য সংহতির কথা ভুলে গিয়ে সতধা বিচ্ছিন্ন হওয়া। (২) আল্লাহ তা’আলার অলৌকিকত্বের উপর নির্ভরশীল হওয়া। (৩) নিজেদেরকে নিষ্ক্রয় রেখে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করার প্রবণতা। (৪) ইসলামি শিক্ষা না থাকা। (৫) জিহাদে অনিহা প্রদর্শন।