আল— হজ্ব : ৩০ থেকে ৩৯
আল কুরআন (আল— হজ্ব : ৩০ থেকে ৩৯) ৩০. এগুলো (হজ্বের বিধান)। এ ছাড়া যে, আল্লাহ এবং পবিত্র (স্থান ও অনুষ্ঠান) সমূহের প্রতি সম্মান দেখাবে, তার প্রভ...
বিস্তারিতনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন
সাঈদ ইবনু আবদুর রহমান মাখযূমী রা. আব্বাদ ইবনু তামীম তৎপিতৃব্য আবদুল্লাহ্ ইবনু যায়দ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয...
বিস্তারিতবাংলাদেশের ইতিহাসে আরেকটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হলো
নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস এর নেতৃত্বে বাংলাদেশের ইতিহাসে আরেকটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হলো। নিঃসন্দেহে এই সরকার একটি বিপ্লবোত্তর সরক...
বিস্তারিতজোবায়ের
আলী জুয়েল
বাংলার
ইতিহাসে বাঙালির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দু’টি গৌরবোজ্জ্বল ঘটনা হলো বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন
ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। অনেক সংগ্রাম ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা এই দু’টি মহান আন্দোলনে বিজয়ী হয়েছি। এখন সেই
মহান ফেব্রুয়ারী মাস। ১৯৫২-এর মহান ভাষা আন্দোলনে এ দেশের সর্বস্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে
শরিক হয়েছিলেন।
একুশে
ফেব্রুয়ারী এলেই আমরা সবাই একত্রিত হয়ে শহীদদের
স্মৃতির প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই, কিন্তু অনেকেই আমরা জানি না ১৯৫২-এর একুশে ফেব্রুয়ারীতে
পুলিশের গুলিতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কতজন ছাত্র ও জনতা প্রাণ দিয়েছিলেন।
এটা অবশ্যই আমাদের সবার জানা দরকার। আমাদের বাঙালির ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে এটা অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
প্রথমেই
উল্লেখ করতে হয়, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে সে সময় কতজন শহীদ হয়েছিলেন তা সঠিকভাবে বলা
আজ কোনো অবস্থাতেই সম্ভব নয়। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী বিনা উসকানিতে পুলিশের গুলিতে
শহীদ হন রফিক উদ্দিন, আবদুল জব্বার, আবুল বরকত। ২১ ফেব্রুয়ারী বিকাল ৩টায় পুলিশের গুলিবর্ষণের
অব্যবহিত পরেই সশস্ত্র পুলিশের দল রাস্তার পাশে পড়ে থাকা গুটিকয়েক লাশ তাদের ভ্যানে
করে সরিয়ে নিয়ে যায়। সে সময় রাস্তার প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে সে রূপ জবানবন্দি পাওয়া
গেছে। পরবর্তীতে এদের কাছে মতামত নিয়ে জানা গেছে, আহতদের সংখ্যা ন্যূনতম পক্ষে প্রায়
১০০ জন হবে।
এ ছাড়াও ২১ ফেব্রুয়ারী দিবাগত গভীর রাতে সেসব সশস্ত্র পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা একযোগে হামলা চালিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের হাসপাতাল মর্গ থেকে শহীদদের বেশ কয়েকটি লাশ সরিয়ে নিয়েছিল। সে জন্য বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মৃতের সঠিক সংখ্যা বলা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
এ ছাড়াও গুলিবর্ষণে আহতদের মধ্যে অপারেশন থিয়েটার এবং হাসপাতালে পরবর্তীতে যারা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন তাদেরও সঠিক হিসাব সংগৃহীত হয়নি বলা চলে। বিশেষজ্ঞদের মতে ৮ জন ছাত্র, জনতার মৃত্যুর খবর সন্দেহাতীতভাবে পাওয়া যায়। ৮ জন শহীদের নাম, পরিচয়, ঠিকানা ইত্যাদির সন্ধান পাওয়া গেলেও তাদের বংশপরিচয় ও বিস্তারিত বিষয়াদির মধ্যে অনেক ভুলভ্রান্তি থাকতে পারে। তবে ৮ জনের মৃত্যু এই তথ্যটি বিশেষভাবে গুরুত্ব বহন করে। মহান বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে ২১ ফেব্রুয়ারী সেই ৮ জন শহীদের পরিচিতি এখানে তুলে ধরা হলো:- (১) আবুল বরকত শহীদ হয়েছেন ২১ ফেব্রুয়ারী ১৯৫২ খৃস্টাব্দ। পরিচয় : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এমএ ক্লাসের ছাত্র। পিতার নাম : মৌলভী শামসুজ্জোহা ওরফে ভুলু মিয়া (১৯৬৩ খৃস্টাব্দে মৃত্যু), মাতার নাম : হাজী হাসিনা বিবি (১৯৮২ খৃস্টাব্দে মৃত্যু), তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে আবুল বরকত ছিলেন পিতামাতার চতুর্থ সন্তান। জন্ম : ১৬ জুন ১৯২৭ খৃস্টাব্দ, জন্মস্থান : গ্রাম-বাবলা, ভরতপুর, জেলা : মুর্শিদাবাদ, রাষ্ট্র : ভারত। ঢাকার ঠিকানা : বিষ্ণু প্রিয়া ভবন, পুরানা পল্টন, ঢাকা। (২) আবদুল জব্বার : শহীদ হয়েছেন ২১ ফেব্রুয়ারী ১৯৫২ খৃস্টাব্দ, পরিচয় : সাধারণ গ্রামীণ কর্মজীবী মানুষ ছিলেন, পিতার নাম : মরহুম হাছেন আলী (১৯৭২ খৃস্টাব্দে মৃত্যু), মাতার নাম : সফাতুন্নেসা (১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যু) পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে আবদুল জব্বার ছিলেন দ্বিতীয়। আবদুল জব্বারের স্ত্রীর নাম আমেনা খাতুন ও তার একমাত্র ছেলের নাম নূরুল ইসলাম বাদল (১৯৫২ খৃস্টাব্দে ভাষা আন্দোলনের সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৫ মাস), জন্ম : ১৩ আগস্ট ১৯১৯ খৃস্টাব্দ। জন্মস্থান : পাঁচুয়া, ইউনিয়ন : রাওনা, উপজেলা : গফরগাঁও, জেলা: ময়মনসিংহ। (৩) রফিক উদ্দীন আহমদ। শহীদ হয়েছে ২১ ফেব্রুয়ারী ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দ পরিচয় : মানিকগঞ্জ জেলার দেবেন্দ্রনাথ কলেজের বাণিজ্য বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। পিতার নাম : মরহুম আবদুল লতিফ (১৯৬২ খৃস্টাব্দে মৃত্যু), মাতার নাম : রাফিজা খানম (মৃত্যু ১৯৮৯ খৃস্টাব্দে), জন্ম : ৩০ অক্টোবর ১৯২৬ খৃস্টাব্দ, গ্রাম : পারিল, উপজেলা : সিঙ্গাইর, জেলা : মানিকগঞ্জ। রফিক উদ্দীন আহমদের ছোট ভাইয়ের নাম খোরশেদ আলম, তিনি এখনো জীবিত। শহীদ রফিক উদ্দীন আহমদ ২০০০ সালে মরণোত্তর একুশে পদক পান।
(৪)
আবদুস সালাম : গুলিবিদ্ধ হন ২১ ফেব্রুয়ারী ১৯৫২ খৃস্টাব্দে। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ৭ এপ্রিল ১৯৫২ খৃস্টাব্দে বেলা
১১টায় মৃত্যুবরণ করেন। পরিচয় : ডাইরেক্টর অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অফিসে রেকর্ড
ক্লিপার পদে চাকরি করতেন। পিতার নাম: মরহুম মো. ফাজিল মিয়া (১৯৭৬ খৃস্টাব্দে মৃত্যু)
মাতার নাম : দৌলতন নেছা (১৯৮২ খৃস্টাব্দে মৃত্যু) তিন বোন ও চার ভাইয়ের মধ্যে আবদুস
সালাম ছিলেন সবার বড়। তার সবচেয়ে ছোট ভাই এখনো জীবিত। জন্ম : ২৭ নভেম্বর ১৯২৫ খৃস্টাব্দ।
জন্মস্থান : গ্রাম : লক্ষণপুর, ইউনিয়ন : মাতৃভূঞা, থানা : দাগনভূঞা, জেলা : ফেনী।
(৫)
শফিউর রহমান। শহীদ হয়েছেন ২২ ফেব্রুয়ারী ১৯৫২ খৃস্টাব্দ পরিচয় : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
আইন ক্লাসের প্রাইভেট ছাত্র ও ঢাকা হাইকোর্টের কর্মচারী। বংশাল রোডের মাথায় শহীদ হন
(ঢাকা)।
পিতার
নাম : মরহুম মাহবুবুর রহমান, মাতার নাম : মরহুমা কানেতাতুন্নেসা। শফিউর রহমানের স্ত্রীর
নাম আকিলা খাতুন (বর্তমানে জীবিত, বয়স আনুমানিক ৮৩ বছর)। শফিউরের ছেলের নাম শফিকুর
রহমান ও মেয়ের নাম আসফিয়া খাতুন। বর্তমানে তারা সবাই উত্তরা মডেল টাউনের বাসিন্দা।
জন্ম : ২৪ জানুয়ারী ১৯১৮ খৃস্টাব্দ, জন্মস্থান :
গ্রাম : কোন্নাগর, জেলা : হুগলি, রাষ্ট্র
ঃ ভারত। ঢাকার ঠিকানা : হেমেন্দ্রনাথ রোড, ঢাকা। ১৯৯০ সালে শহীদ শফিউর রহমানকে
মরণোত্তর একুশে পদক দেয়া হয়।
(৬)
আবদুল আউয়াল শহীদ হয়েছেন ২২ এপ্রিল ১৯৫২ খৃস্টাব্দ। (বর্তমান ঢাকা রেলওয়ে হাসপাতাল
সংলগ্ন এলাকায় সশস্ত্র বাহিনীর মোটর গাড়ির নিচে চাপা পড়ে মৃত্যু)। পরিচয় : রিকশা চালক,
পিতার নাম : মো. আবদুল হাশেম, জন্ম : ১১ মার্চ ১৯৩৪ খৃস্টাব্দ (আনুমানিক), জন্মস্থান
: সম্ভবত গেন্ডারিয়া, ঢাকা।
(৭)
মো. অহিউল্লাহ। শহীদ হয়েছেন ২২ ফেব্রুয়ারী ১৯৫২ খৃস্টাব্দ। ঢাকার নবাবপুর এলাকার বংশাল
রোডের মাথায় সশস্ত্র পুলিশের গুলিতে নিহত হন এবং তার লাশ পুলিশ অপহরণ করে। পরিচয় :
শিশু শ্রমিক, পিতার নাম : হাবিবুর রহমান, পিতার পেশা : রাজমিস্ত্রি, জন্ম : ১১ সেপ্টেম্বর
১৯৪১ খৃস্টাব্দ (আনুমানিক), জন্মস্থান : অজ্ঞাত।
(৮)
অজ্ঞাত বালক। শহীদ হয়েছেন ২২ ফেব্রুয়ারী ১৯৫২ খৃস্টাব্দ। মৃত্যু : সম্ভবত কার্জন হল
এলাকায় মোটরগাড়ি দুর্ঘটনায় পরিচয় : সম্পূর্ণ অজ্ঞাত। ২২ ফেব্রুয়ারী ১৯৫২ খৃস্টাব্দে
১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে যে শোক মিছিল বেরিয়েছিল এই অজ্ঞাতনামা বালক ওই মিছিলে অংশ নিয়েছিল।
মিছিলটিকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য মিছিলের মধ্যখানে তৎকালীন সশস্ত্র বাহিনী ট্রাক চালিয়ে
দিলে এই অজ্ঞাতনামা বালকটি সঙ্গে সঙ্গে মারা যায়। ১৯৫২ খৃস্টাব্দের ২১ ফেব্রুয়ারী মহান
ভাষা আন্দোলনে যেসব ছাত্র, জনতা, সাধারণ মেহনতি মানুষ জীবনকে বাজি রেখে, তুচ্ছ জ্ঞান
করে নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রামের মধ্যদিয়ে বাংলা ভাষা, মায়ের ভাষাকে ছিনিয়ে এনেছেন, ইতিহাসের
যুগ সন্ধিক্ষণে তাদের আমরা আজ হৃষ্টচিত্তে অভিবাদন জানাই। আমাদের মহান বায়ান্নর ভাষা
আন্দোলনের প্রতি সম্মান জানিয়ে ১৭ নভেম্বর ১৯৯৯ খৃস্টাব্দে ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনে
২১ ফেব্রুয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রূপে ঘোষণা করা হয়। ইউনেস্কোভুক্ত বিশ্বের
১৮৮টি দেশে ২১ ফেব্রুয়ারীকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ রূপে পালনের মধ্য দিয়ে আমাদের মাতৃভাষার
প্রতি গভীর ভালোবাসা ও অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা জানিয়ে চরম আত্মত্যাগের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
এটি সমগ্র বাঙালি জাতির গর্বের বিষয়।
১৯৫২
সালের ২১ ফেব্রুয়ারীর জাগ্রত চেতনার পথ ধরেই ১৯৭১ সালে এসেছে আমাদের স্বাধীনতা। এদেশের
বুকে লেখা হয় নতুন ইতিহাস, শুরু হয় রক্ত অক্ষরে লেখা ভাষা আন্দোলনের নতুন অধ্যায়। বর্তমানে
‘একুশ’ শব্দটি কিংবদন্তির খ্যাতি
পেয়েছে। এটি বাঙালির জীবন দর্শন এবং বাংলাদেশের জন্ম ইতিহাস। ৫২’র একুশ বাঙালিকে দিয়েছে আপন সভ্যতা আবিষ্কারের
মহিমা। একুশে ফেব্রুয়ারীর মাধ্যমেই আমরা অর্জন করেছি স্বাধিকার আন্দোলনের চেতনা। মহান
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে বীর শহীদদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস চিরকাল স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।(লেখক : গবেষক, সাহিত্যিক ও ইতিহাসবিদ।)
একুশে ফেব্রুয়ারী বাঙালি জাতির চির প্রেরণার অবিস্মরণীয় একটি দিন। এটি শুধু বাংলাদেশের নয়, এখন এটি সারা বিশ্বের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। জাতির জীবনে শোকাবহ, গৌরবোজ্জ্বল, অহংকারে মহিমান্বিত চিরভাস্বর এই দিনটি।
একুশে ফেব্রুয়ারী বাঙালি জাতির চির প্রেরণার অবিস্মরণীয় একটি দিন। এটি শুধু বাংলাদেশের নয়, এখন এটি সারা বিশ্বের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। জাতির জীবনে শোকাবহ, গৌরবোজ্জ্বল, অহংকারে মহিমান্বিত চিরভাস্বর
কুরআনের বহু আয়াতে মহান আল্লাহ কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন মানুষের কথা উল্লেখ করে জানিয়েছেন, তাদের তিনি ভালোবাসেন। এ নিবন্ধে আল্লাহর প্রিয় সে সকল পুণ্......
কুরআনের বহু আয়াতে মহান আল্লাহ কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন মানুষের কথা উল্লেখ করে জানিয়েছেন, তাদের তিনি ভালোবাসেন। এ নিবন্ধে আল্লাহর প্রিয় সে সকল পুণ্......