অনুসরন করুন :
আল-কুরআন

আল কুরআন : আল- আম্বিয়া : ৪৪ থেকে ৬৪

বরং আমরাই তাদের এবং তাদের পূর্ব পুরুষদের ভোগবিলাসের উপকরণ দিয়েছি, তাছাড়া তাদের বয়সকালও হয়েছিল দীর্ঘ। তারা কি দেখেনা, আমরা তাদের দেশকে চারদিক থেকে সংকু...

বিস্তারিত
আল-হাদীস

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন

আবু আইয়ুব রা. বলেন, আমি যখনি তোমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পিছনে নামায পড়েছি, তাকে নামায শেষ করে এই দোয়া পড়তে শুনেছি। (যার অর্থ:) হে...

বিস্তারিত
সম্পাদকীয়

আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা

প্রাণের বাংলাদেশ স্বাধীন হলো। প্রিয় বাংলাদেশ স্বাধীন হলো। এই স্বাধীনতা আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা ৭১ সা...

বিস্তারিত

অবিস্মরণীয় চরিত্র আমার নানা

মোহাম্মদ জাওয়াদ-উল-আলম

আমার এই ছোট্ট জীবনে আমি যে কজন মানুষ দেখেছি তাদের মধ্যে যাঁকে আমি সবচেয়ে শ্রদ্ধা করতাম এবং এখনও করেযাব তিনি হচ্ছেন আমার নানা। তিনি ছিলেন আমার কাছে এক অবিস্মরণীয় চরিত্র। যাঁর নাম মঞ্জুর হোসেন খান। তিনি ছিলেন একাধারে ধার্মিক, পরিশ্রমী, হৃদয়বান, বুদ্ধিমান, দয়ালু, ক্ষমাশীল বড় মাপের মনের মানুষ। তার নেশাই ছিল অন্যকে সাহায্য করা। মসজিদ, এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, সেবামূলক প্রতিষ্ঠান যেখানে যেভাবে দরকার তার সাহায্যের হাত সেখানে সময়মত পৌঁছে যেত। অত্যন্ত কর্মঠ ব্যক্তি ছিলেন তিনি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেন প্রতিদিন মসজিদে গিয়ে। তিনি বাচ্চাদের সাহচর্য পছন্দ করতেন। তিনি বাচ্চাদের সাথে খেলতেন। মজার মজার গল্প করতেন। হাসি-ঠাট্টা করতেন তাদের সাথে। শুধু তারাই এটা অনুধাবন করতে পারবে যারা আমার নানার কাছাকাছি এসেছে। তিনি সবসময় চেষ্টা করেছেন কেউ যেন তাঁর ব্যবহারে কষ্ট না পায়। নানা আমাকে আমার পড়াশোনার ব্যাপারে অনেক সাহায্য করতেন। আমার পরীক্ষার আগে নানার কাছে যেতাম বিশেষ করে ইংরেজী, অঙ্ক ও ভূগোল পরীক্ষার আগে। এত সুন্দর সহজ ও সাবলীল ভাবে নানা আমাকে বুঝিয়ে দিতেন যার কোন তুলনা নেই। তিনি নিজে একজন ভাল ছাত্র ছিলেন সেই সাথে ভাল শিক্ষকও বটে।

তিনি জ্ঞান পিঁপাসু একজন ব্যক্তি। অনেকগুলো ভাষা তাঁর দখলে ছিল। যেমন- ফ্রান্স, স্পেনিস, জাপানিজ, এরাবিক, ইংরেজী, বাংলা, উরদূ, হিন্দী, পশতু এবং সংস্কৃত ভাষা। কৃতি খেলোয়াড়ও ছিলেন তিনি। প্রথম জীবনে ফুটবল, ওয়াটার পোলো, হকি, টেনিস, ব্যাডমিন্টন বিভিন্ন খেলায় সমান পারদর্শী ছিলেন। আশি বছর বয়সেও উনাকে দেখেছি সাঁতার কাটতে, ফুটবল খেলতে ও ব্যাডমিন্টন খেলতে। শুধু তো খেলাধূলা নয়, সঙ্গীতের জগতেও তাঁর ছিল স্বচ্ছন্দ বিচরণ। উচ্চাঙ্গ সংগীতে ছিল তাঁর অসাধারণ পান্ডিত্য। শুনেছি রাগ ভিত্তিক কোন গান শুনলেই আমার নানা আমার মা, খালা, মামাকে জিজ্ঞেস করতেন, ‘বলতো এটা কোন রাগ, কোন ঠাট কারণ, একসময় তারাও অল্প-সল্প গান শিখেছিল। এ ছাড়া তিনি বেহালা বাজাতেন খুব সুন্দর। সেই সাথে গীটার, তানপুরা, সেতারা, বাঁশী, পিয়াণোতেও তাঁর দক্ষতা ছিল দেখার মত। খেতেও পছন্দ করতেন আমার নানা। যদিও তাঁর খাওয়ার পরিমাণ ছিল অত্যন্ত সীমিত। তাঁর পরিবার, তাঁর নাতি-নাতনীরা তাঁর কাছে ছিল সবার আগে। আমরা যখন তাঁর ঘরে যেতাম তিনি তখন আমাদের কপালে চুমো খেতেন। মজার মজার কথা বলতেন। সেই সময় তাকে সত্যিই ছোট বাচ্চার মত মনে হত। তখন তাকে সত্যিকারের কৌতুক প্রিয় হিসেবেই মনে হত। সময়ের কাজ সময়ে করতে পছন্দ করতেন। সময় দিয়ে কাউকে কখনও তিনি বসিয়ে রাখেন নি। কাউকে সময় দিলে কঠোরভাবে সেই সময় তিনি রক্ষা করতেন।  সারা জীবন তিনি অনেক ত্যাগও স্বীকার করেছেন বিভিন্ন কারণে। সেই জন্য তাঁকে কখনও আফসোস্ করতে দেখি নি বা ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুনি নি। তিনি সর্বাবস্থায় আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেন। চরম বিপর্যয়ের সময়ও তিনি

বলেছেন, সব আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছা। তার উপর ভরসা রাখতে হবে। এত অসুস্থতার মধ্যেও যখন তিনি কথা বলতে পারেন নি, নড়াচড়া করতে পারেন নি, তখনও কেউ তাঁকে জিজ্ঞেস করলে কেমন-আছেন, তখনও মাথা নেড়ে বুঝিয়েছেন ভাল আছেন। আর যখন তিনি সুস্থ ছিলেন তখন বলতেন আল-হামদু লিল্লাহ ভাল আছি। তাঁর থেকেও অনেক বেশী অসুস্থ মানুষ আছে পৃথিবীতে যাদের কষ্টের কাছে তাঁর কষ্ট নাকি কিছুই না-এ কথা আমার নানীর কাছে বলতে শুনেছি। এটাও বলতেন ওদের সাথে তুলনা করলে তিনি তো বেহেশতে আছেন। তিরাশি বছর বয়সে মরণ ব্যাধিতে তিনি আক্রান্ত হন। যে ব্যাধি তাকে আস্তে আস্তে নিজে নিজে নড়াচড়া করার ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। স্বাভাবিকভাবে খাওয়ার ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। কিন্তু তাঁর মস্তিস্ক, তাঁর বুদ্ধিমত্তা ভীষণভবে সক্রিয় থাকে। তাঁর অনুভূতি ভীষণভাবে তীক্ষ্ণ ছিল  ঐ সময়গুলোতে। প্রায় ১ বছর আমার নানা অসুখে ভুগেছিলেন। কিছু দিন পরই তার কথা বন্ধ হয়ে যায়, তখন তিনি লিখে সবার সাথে যোগাযেগ রক্ষা করতেন। তিনি শুনতে পেতেন কিন্তু জবাব দিতে পারতেন না, তাই লেখার সাহায্য নিতেন। তবে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই তাঁর সেই শক্তিও নিঃশেষ হয়ে যায়। কি যে চমৎকার একজন মানুষ!একটা বছর ভুগে আমাদেরকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে দিয়ে তিনি চলে গেলেন। তিনি সত্যিই এমন একজন মানুষ যাকে ভোলা যায় না। তাঁর স্মৃতি আমার চোখে পানি এনে দেয়। একজন নিভৃতচারী অসাধারণ ব্যক্তিত্ব তিনি। আমার হৃদয়ে তার স্মৃতি সারাজীবন উজ্জ্বল নক্ষত্রের মত জ্বলজ্বল করবে। আমার নানা আমার রোল মডেল। যদিও আমি জানি যা কিছু করি না কেন আমি, কখনই আমি তাঁর সমকক্ষ হতে পারব না। যেখানেই আমার নানা আছেন-আল্লাহ যেন নানাকে ভাল রাখেন। তাঁর জান্নাতে রাখেন। আমীন! (পূণ:মুদ্রিত)

0 | দেখেছেন : 292 |

সম্পর্কিত খবর

সংস্কারের উপদেষ্টা মঞ্জুর হোসেন খান

এম. এইচ. খান। মঞ্জুর হোসেন খান। আমি তখন আন্তর্জাতিক একটি ত্রাণসংস্থায় কাজ করছি। ১৯৯৫ সালের জানুয়ারী থেকে ওই অফিসে মূলত আমার কাজ। তার আগে আরো প্রায় দু’মাস ওই অফিসের কাজ করেছি পরীক্ষামূলক। যা ছিল ১৯৯৪ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর। শুরুতে আমাদের অফিস ছিল বারিধারায়। এরপর অফিস স্থানান্তরিত হল উত্তরার সোনার গাঁ জনপথের ২০ নাম্বার বাড়ীতে। ৯৫ এর শেষ দিকে এম. এইচ. খান সাহেব আমাদের অফিসের কনস্ট্রাকশন প্রজেক্ট ডিপার্টমেন্টে এলেন এডভাইজার হিসেবে। তিনি এডভাইজার হলেও আমরা তাকে ওই ডিপার্টমেন্টের প্রধানের মতই জানতাম। পরবর্তীতে এই বিভাগের দু’জন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার এলেন। একজন আ: রাজ্জাক, অন্যজন আ: রহীম। আমরা বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণের জন্যে মহাপরিচালক ড. আহমদ মাহের এর নেতৃত্বে বৈঠকে বসতাম।